আজ বৃহস্পতিবার, ২০শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সীমানা নির্ধারন নিয়ে ইসিতে না’গঞ্জের ৫টি আসনেই আপত্তি

নির্বাচনে পর্যবেক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত ১৪ মার্চ সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছিল। এর উপর আপত্তি ও সুপারিশ দেওয়ার নির্ধারিত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিলো ১ এপ্রিল পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৬৫০টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৪৮৭টি ইসির প্রস্তাবের বিপক্ষে। আর ১৬৩টি আবেদন ইসির প্রস্তাবের পক্ষে জমা পড়েছে। নারায়ণগঞ্জের ৩, ৪ ও ৫ আসন সম্পর্কে আপত্তি তুলে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার ২ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের আবেদন করা হয়েছে। এবং আসন বিন্যাসের চূড়ান্ত খসড়ায় যেসব আসন অন্তভূক্ত হয়নি, সে নিয়েও আপত্তি জানানো হয়েছে। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আসন বিন্যাস নিয়ে সব থেকে বেশি আপত্তি জমা পড়েছে। বিপরীতে পক্ষে কয়েকটি আবেদনও জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, আবেদনগুলো তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে শুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন বিন্যাস প্রসঙ্গে তেমন একটা আপত্তিপত্র জমা না পড়লেও পক্ষে অনেকেই মত দিয়েছেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন পুনঃবিন্যাসের আবেদন জানানো হয়েছে। এই আসনটির সাথে সিদ্ধিরগঞ্জকে একভূত করার পক্ষে কিছু আবেদন পড়েছে। একই সাথে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনকে পূর্বের অবস্থা তথা সদর উপজেলা কেন্দ্রিক আসন বিন্যাসের আবেদন করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত খসড়ার পক্ষে এবং বিপক্ষে যেসব আবেদন পড়েছে সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের আবেদনই সব থেকে বেশি। অন্যান্য স্থানে বর্তমান ও সাবেক সাংসদরা পক্ষে বিপক্ষে আবেদন জানালেও নারায়ণগঞ্জের ৪টি আসনের পক্ষে বিপক্ষে বর্তমান ও সাবেক সাংসদদের কোনো আপত্তি নাম উল্লেখ করে জমা দেয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ১,২,৩ অপরবর্তিত রেখে ৪ ও ৫ আসন দুটি পুনঃবিন্যাসের খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই আসন বিন্যাসের ফলে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ভোটার সংখ্যা ও সীমানার পরিধি কমিয়ে যুক্ত করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সঙ্গে। তবে এই বিন্যাসের বিপক্ষে বেশ কিছু আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে। আবেদনগুলোতে দাবি করা হয়েছে, জনসংখ্যা বিবেচনায় এই আসন দু’টিতে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হবে।
সূত্র জানায় সব থেকে বেশি আপত্তি জানানো হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন বিন্যাস নিয়ে। আবেদনগুলোর মধ্যে এই আসনকে সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ণ নিয়ে পৃথক আসন করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সঙ্গে সংযুক্ত করার আবেদনও রাখা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন নিয়েও আপত্তি জমা পড়েছে। তবে পক্ষেও সমর্থন জানানো হয়েছে। তুলনামূলক ভাবে আপত্তির পরিমাণই বেশি।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে একাধিক আবেদন করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সীমানাও পুনঃবিন্যাসের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

এসব আবেদনগুলোর মধ্যে বিএনপিপন্থীদের আবেদনই সর্বাধিক। ক্ষমতাসীন দলের আপত্তিও রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন নিয়ে সর্বাধিক আপত্তির মধ্যে বিএনপি পন্থীদের আপত্তিই সব থেকে বেশি। এই আপত্তির মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জকে পৃথক করার আবেদনটাই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ক্ষমতাসীন দল থেকে যেসব আপত্তি জানানো হয়েছে সেখানে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ভারসাম্যতা রক্ষার দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে খসড়া অনুপাতে আসন বিন্যাস করা হলে এখানে লোকসংখ্যা হিসেবে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে। ব্যাপরটি পুনঃবিবেচনার আবেদন জানানো হয়।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ৩, ৪ ও ৫ আসন সম্পর্কে আপত্তি তুলে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার ২ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের আবেদন করা হয়েছে। তবে আসনবিন্যাসে ইসি উপজেলার অখ-তা রক্ষা করতে চেয়েছে। কিন্তু ইসির খসড়া অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ ৪ ও ৫ এর ক্ষেত্রে খ-িত উপজেলা থেকেই যাচ্ছে বলেও যুক্তি তুলে ধরে আপত্তি জানানো হয়েছে। সেই সাথে আসন বিন্যাসের ক্ষেত্রে কিছু প্রস্তাবনার কথাও জানানো হয়েছে আবেদনে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ